ভালোবাসার টানে চীন থেকে বাংলাদেশে, বিরলের তরুণীকে বিয়ে চীনা যুবকের
দিনাজপুর: বিরল উপজেলায় এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এক চীনা যুবক। মোবাইল অ্যাপে পরিচয়, গুগল ট্রান্সলেটের মাধ্যমে আলাপ, এভাবেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বিজ্ঞাপন
দিনাজপুরের বিরলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এক চীনা যুবক। 'হ্যালো ট্যাগ' নামের একটি মোবাইল অ্যাপে পরিচয় হওয়ার পর গুগল ট্রান্সলেটের মাধ্যমে এক বছরের আলাপচারিতা প্রেমের রূপ নেয়। সেই প্রেমের টানে চীনের জিয়াংশু সিটি থেকে উড়ে এসেছেন ইয়ং সাও সাও (২৬) নামে এক চীনা নাগরিক। গত ৪ আগস্ট বাংলাদেশে আসার পর ৯ আগস্ট সুরভী আক্তার (১৯) নামে এক বাংলাদেশি তরুণীর সঙ্গে তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসেন।
বিজ্ঞাপন
সুরভী বিরল উপজেলার কাজীপাড়া শিমুলতলী এলাকার নুর হোসেন বাবুর বড় মেয়ে। ইয়ং সাওয়ের বাবা ইয়াং শি মারা গেছেন এবং মা লিও ট্যাংহু চীনে বসবাস করেন।
বিয়ে দেখতে ভিড়
সরেজমিনে সুরভীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের গ্রাম থেকে অসংখ্য মানুষ নতুন বিদেশি জামাইকে দেখতে ভিড় করছেন। অনেকেই তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন এবং ইয়ং সাও মোবাইল ট্রান্সলেটরের সাহায্যে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। অনেকে তার সঙ্গে সেলফি ও ভিডিও তুলছেন।
প্রেম ও বিয়ের গল্প
নিজেদের প্রেম ও বিয়ে নিয়ে সুরভী আক্তার বলেন, "'হ্যালো ট্যাগ' অ্যাপের মাধ্যমে আমাদের পরিচয় হয়। এরপর কথা বলতে বলতে আমাদের মধ্যে মন দেওয়া-নেওয়া শুরু হয়। এক বছর ধরে আমাদের সম্পর্ক চলছে। পরে সে বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমি তাকে জানাই, যদি সে আমার ধর্ম গ্রহণ করে, তাহলে আমি বিয়েতে রাজি আছি। এরপর সে বাংলাদেশে আসে এবং আমাকে বিয়ে করে। আমার পরিবার ও এলাকাবাসী এতে খুব খুশি।"
বিজ্ঞাপন
সুরভীর ছোট বোন রিয়া আক্তার তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, "আমি খুব খুশি। আমার দুলাভাই একজন চীনা নাগরিক, এটা আমার জন্য গর্বের। সে আমার বোনের ভালোবাসার টানে বাংলাদেশে এসেছে। আমি মোবাইল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে তার সঙ্গে কথা বলছি। আমার পরিবারের সবাই এই বিয়েতে অনেক আনন্দিত।"
পরিবারের সমর্থন
সুরভীর বাবা নুর হোসেন বাবু বলেন, "আমার দুই মেয়ে, তারা মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকে। আমার বড় মেয়ের সঙ্গে এই চীনা নাগরিকের পরিচয় হয় এবং তারা একে অপরকে পছন্দ করে। খবর পেয়ে আমি তাদের ৯ আগস্ট ঢাকার গাজীপুর থেকে দিনাজপুরে নিয়ে আসি।"
এলাকাবাসীর উচ্ছ্বাস
স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, "আমাদের এলাকায় একজন বিদেশি জামাই এসেছেন, এটা অবশ্যই ভালো লাগার মতো এবং গর্বের বিষয়। অনেকেই তাকে দেখতে আসছেন, কথা বলছেন। আগে শুধু টিভিতে বিদেশি জামাই দেখতাম, এখন আমাদের নিজেদের এলাকায় দেখছি।"
0 মন্তব্যসমূহ