পাথরের হৃদয় আর লিমনের ভ্যান: এক নির্মম মৃত্যুর গল্প
আমরা আসলে কেমন এক দুনিয়ায় বেঁচে আছি? মানুষের হৃদয় যেন দিন দিন পাথরের মতো শক্ত হয়ে যাচ্ছে। সহানুভূতি, ন্যায় আর দয়ার আলো যেন ক্রমশ ম্লান হয়ে আসছে।
লিমন, একজন সাধারণ ভ্যানচালক, জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। কিন্তু এই অক্ষমতাকে তিনি কখনোই নিজের বোঝা হতে দেননি। কারো কাছে হাত পাতেননি, কারো দয়ার পাত্র হননি। নিজের দুই হাতের পরিশ্রমে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় মাথায় নিয়ে ভ্যান চালিয়ে তিনি সংসারের চুলায় আগুন জ্বালাতেন। তার ঘামের প্রতিটি ফোঁটা ছিল পরিবারের হাসির কারণ, তার জীবন ছিল সংগ্রামের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
কিন্তু কে জানতো— যে ভ্যান তার জীবনের একমাত্র অবলম্বন, সেই ভ্যানই একদিন তার জীবন কেড়ে নেবে? গত রাতে লিমনের প্রাণহীন দেহ পড়ে ছিল অভয়নগরের শ্রীধরপুর ইউনিয়নের এক কোণে। তার নিস্তব্ধ চোখ যেন প্রশ্ন করছিল— আমার অপরাধটা কী ছিল?
ঘাতকরা শুধু লিমনের ভ্যান নিয়ে যায়নি, নিয়ে গেছে তার স্বপ্ন, তার সংগ্রামের গল্প, আর আমাদের মানবতার শেষ কিছু অবশিষ্টাংশ। লিমনের মৃত্যু শুধু একজন মানুষের মৃত্যু নয়, এটা আমাদের সমাজের নিষ্ঠুরতা, লোভ আর নৈতিক পতনের নগ্ন প্রমাণ। আমরা লিমনকে হারিয়েছি, হারিয়েছি মানুষের মতো মানুষ হওয়ার শিক্ষা।
আল্লাহ, আমাদের এমন হৃদয় দাও, যেখানে সহানুভূতি, ন্যায় আর দয়া এখনও বেঁচে থাকে। আমীন।
0 মন্তব্যসমূহ