যুদ্ধের মধ্যেও যেভাবে সরকারি কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছে হামাস
গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও সরকারি কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করেনি হামাস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম **বিবিসি-র** এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত প্রায় পৌনে দুই বছরে ৩০ হাজার কর্মীকে প্রায় ৭০ লাখ ডলার সরবরাহ করা হয়েছে। বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে কর্মীদের কাছে এই অর্থ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, যদিও ইসরায়েলি আগ্রাসনে তাদের আর্থিক কাঠামো পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।
বেতন বিতরণ প্রক্রিয়া
যুদ্ধকালীন বাস্তবতায় গাজায় কার্যকর কোনো ব্যাংকিং ব্যবস্থা নেই। তাই হামাস এক বিশেষ কৌশলে কর্মীদের বেতন বিতরণ করছে। কর্মীদের কাছে অথবা তাদের পরিবারের সদস্যদের ফোনে **এনক্রিপ্টেড এসএমএস** পাঠানো হয়। এই মেসেজে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কোনো এক বন্ধুর সাথে দেখা করার কথা বলা হয়। সেখানে যাওয়ার পর, গোপনে একটি খামে করে বেতনের অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে, সংঘাতের কারণে বেতনের মাত্র **২০ শতাংশ** অর্থ দেওয়া হচ্ছে এবং এটি মাসের পরিবর্তে **১০ সপ্তাহ পরপর** পাঠানো হয়।
অর্থের উৎস কোথায়?
এত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও হামাস কোথা থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করছে, সে বিষয়ে বিবিসি কোনো সুস্পষ্ট তথ্য পায়নি। তবে ফিলিস্তিনি সংগঠনটির একজন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন যে, ৭ই অক্টোবরের হামলার প্রস্তুতির সময় গাজার টানেলে **৭০০ মিলিয়ন ডলার** এবং লাখ লাখ শেকেল অর্থ জমা করে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কাতার ও মিসরের **মুসলিম ব্রাদারহুড** থেকেও তারা বিপুল সহায়তা পায়। পাশাপাশি, গাজায় বিভিন্ন পণ্য থেকে বাড়তি করও আদায় করে তারা।
এই কৌশলেও ঝুঁকি রয়েছে। বেশ কয়েকবার বেতন নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও অর্থের প্রয়োজনে বেতন সংগ্রহ করতে যান নিরুপায় কর্মীরা। মৃত্যুর মিছিল আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও গাজার স্বাস্থ্যকর্মীসহ অন্তত **৩০ হাজার সরকারী কর্মী** নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
0 মন্তব্যসমূহ